Monday, August 5, 2013

রবীন্দ্রনাথের ভাষণে বুদ্ধগয়া প্রসঙ্গ

Posted in , , ,
Author: Sona Kanti Barua,
President, Canadian Buddhist Council, Toronto
ভারত সরকার দানব নদীতে বাঁধ দিয়ে ২০০১ সালে লুম্বিনী ধ্বংসের পরিকল্পনা ছিল কেন? মহাচীনের ভয়ে ভারত থেমে গেছে।  আজকের ভারতীয় রাজনীতি দানব নদীর পানিকে অস্ত্রের মতো  ব্যবহার করে বুদ্ধের জন্মভূমি লুম্বিনি কানন সহ বিশাল জনপদ ধ্বংস করতে উদ্যত। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষায়, “তিনি (গৌতমবুদ্ধ) জন্মেছেন মানবের চিত্তে, প্রতিদিন তিনি জন্মাচ্ছেন, প্রতিদিন তিনি বেঁচে আছেন।”বিশ্ববিজয়ী বৌদ্ধজগত এবং মহাচীনের বৌদ্ধগণ গৌতমবুদ্ধের জন্মভূমি লুম্বিনী রক্ষার জন্যে বদ্ধপরিকর এবং চীন সরকার সম্প্রতি লুম্বিনী উদ্যান প্রাঙ্গনে বৌদ্ধ বিশ্ববিদ্যালয়, হোষ্টেল কমপ্লেক্স, মিউজিয়াম এবং হাইওয়ে প্রতিষ্ঠার জন্যে ৩ বিলিয়ন ডলার বাজেট ঘোষনা করেছেন ভারতের বিরুদ্ধে বুদ্ধের জন্মভূমি লুম্বিনি রক্ষার জন্যে। দিনের পর দিন হিন্দুরাজনীতি বৌদ্ধহত্যা যজ্ঞ (দেশ, ৪ মে ২০০১ পৃষ্ঠা ১২ কলকাতা এবং সম্পাদকীয় ২২ আগষ্ট ১৯৯৩ আনন্দবাজার পত্রিকা) সহ গৌতমবুদ্ধের ঐতিহাসিক পবিত্র জন্মভূমি নেপালের ‘লুম্বিনী উদ্যান’  নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র  রচনা করে চলেছে ।
হিন্দুত্ববাদীদের আক্রমনে ভারতের মাটিতে গৌতমবুদ্ধের তপস্যা এবং বৌদ্ধধর্ম ধ্বংসের বিলুপ্ত প্রসঙ্গে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর বিভিন্ন কবিতা এবং প্রবন্ধে আলোচনা করেছিলেন। গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষায়, তাঁর (গৌতমবুদ্ধের) তপস্যা কি শুধু ইতিহাসের পাতায় লেখা আছে ? ভারতের মাটিতে আজ তাঁর তপস্যা বিলুপ্ত হয়েছে। আমাদের অমূল্য ভান্ডারে দ্বার ভেঙ্গে গেছে। মানুষকে আমরা শ্রদ্ধা করিনে। . . .গৌতমবুদ্ধ আমার মহান গুরু, আমার সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষক।Òh Buddha, my lord, my master, thy birthplace, is truly here where cruel is the world of men, for thy mercy is to fill the black of their utter failure, to help them who have lost their faith and betrayed their trust; to forget themselves in thee and thus forget their day.

ভারতের হিন্দুত্ববাদী ষড়যন্ত্র এবং ইসলামি জঙ্গীর ভয়ে বৌদ্ধগণ ভীত নহেন। একত্রিশ ভূবন বিজয়ী গৌতমবুদ্ধের জয়স্তো বোধিয়ামুলের বুদ্ধত্বভূমি এবং বুদ্ধের শারিরিকা ধাতু সম্পর্কিত মহাবোধির বুদ্ধগয়ায় বোমা হামলার পূর্বে ভারত সরকার ২০০১ সালে লুম্বিনী ধ্বংসের পরিকল্পনা করেছিল।
জনতার প্রশ্ন : বেড়ালের গলায় ঘন্টা বাঁধবে  কে ? সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, ডঃ বি. আর আম্বেদকর, দেশ  পত্রিকা এবং আনন্দবাজার পত্রিকা হিন্দুত্ববাদী বেড়ালের গলায় ঘন্টা বেঁধেছেন।  ভারতে বৌদ্ধধর্মকে ধ্বংস করতে বৈদিক এবং ব্রাহ্মণ্য ধর্মের বিভিন্ন ষড়যন্ত্র ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর গৌতমবুদ্ধের পাদপদ্মে সশ্রদ্ধ বন্দনা নিবেদন করে বলেছেন, (মহামানব বুদ্ধ, সৌজন্য, দেশ, কলকাতা, ০২ মে, ২০০৫, পৃষ্ঠা নং ৪১;  ভাষন, ১৮ মে, ১৯৩৫ সাল, ধর্মরাজিকা বিহার, কলকাতা মহাবোধি সোসাইটি), “ “আমি যাঁকে আমার অন্তরের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ মানব বলে উপলব্ধি করেছি আজ এই বৈশাখী পূর্ণিমায় তাঁর জন্মোৎসবে তাঁকে আমার প্রনাম নিবেদন করতে এসেছি, এ কোন বিশেষ অনুষ্ঠানে অর্ঘ নিবেদন নয়, যাঁকে নির্জনে বারংবার অর্ঘ নিবেদন করেছি, সেই অর্ঘই আজ নিবেদন করতে উপস্থিত হয়েছি।
একদিন বুদ্ধগয়াতে বুদ্ধমন্দির দর্শনে গিয়েছিলুম। সেইদিন এ কথা মনে জেগেছিল – যে সময়ে ভগবানবুদ্ধের চরণস্পর্শে সমস্ত বসুন্ধরা জেগে ওঠেছিল, গয়াতে যেদিন তিনি স্বশরীরে উপস্থিত ছিলেন, সেদিন কেন আমি জন্মাই নি, কেন সেদিন অনুভব করিনি তাঁকে একান্তভাবে শরীর মন দিয়ে। . . .
বিগত ২২ আগষ্ট ২০১২ বুদ্ধগয়ার মালিকানা ভারতীয় বৌদ্ধদের হাতে  হস্তান্তর প্রসঙ্গে সুপ্রীম কোর্টের রায় ভারত সরকার প্রত্যাখ্যান করেছে ।   কোটি কোটি ভয়ঙ্কর মার বিজয়ী মহাকারুণিক বুদ্ধকে সশ্রদ্ধ বন্দনা নিবেদন করে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একান্ত মনে বুদ্ধ ভাবনায় নিমগ্ন হয়ে তাঁর উক্ত বিখ্যাত ভাষন রবি ঠাকুরের মনের বুদ্ধনুভাব বা ফিলিংস অব বুদ্ধ; শরীর মন দিয়ে বুদ্ধকে অনুভব করার কথা বৌদ্ধকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরই এমন তরো সহজ ভাবে বলতে পেরেছিলেন।
সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিম চন্দ্র চট্টোপাধ্যায়  ব্রাহ্মণদের কুসংস্কারের বিরুদ্ধে ‘সাম্যবাদ’ নামক বই লিখেছিলেন এবং গৌতমবুদ্ধকে সশ্রদ্ধ বন্দনা নিবেদন করে ঘোষণা করলেন,  “তখন বিশুদ্ধাত্মা শাক্যসিংহ অনন্তকালস্থায়ী মহিমা বিস্তার পূর্বক, ভারতাকাশে উদিত হইয়া, দিগন্ত প্রসারিত রূপে বলিলেন, “আমি উদ্ধার করিব। আমি তোমাদেরকে উদ্ধারের বীজমন্ত্র দিতেছি, তোমরা সেই মন্ত্র সাধন কর। তোমরা সবাই সমান। ব্রাহ্মণ শুদ্র  সমান। মনুষ্যে মনুষ্যে সকলেই সমান। সকলেই পাপী, সকলের উদ্ধার সদাচরণে। বর্ণ বৈষম্য মিথ্যা। যাগযজ্ঞ মিথ্যা। বেদ মিথ্যা, সূত্র মিথ্যা, ঐহিক সুখ মিথ্যা, কে রাজা, কে প্রজা, সব মিথ্যা। ধর্মই সত্য। মিথ্যা ত্যাগ করিয়া সকলেই সত্যধর্ম পালন কর। (বঙ্কিম রচনাবলী, ২য় খন্ড, পৃষ্ঠা ৩৮২ থেকে ৩৮৩, সাহিত্য সংসদ প্রকাশিত, কলকাতা)।”
হিন্দুরাজনীতি বৌদ্ধ জাতির সত্যিকারের ইতিহাসকে মিথ্যার বেসাতি দিয়ে ঢেকে ফেলেছে। বৈদিক ব্রাহ্মণ্য রাজনীতি বৌদ্ধধর্মের চির শত্র“ হয়ে আছে। আনন্দবাজার পত্রিকার ভাষায় “সেই উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা কেমন করিয়া ভুলিয়া গেলেন, অসংখ্য বৌদ্ধ ধর্মস্থান ধ্বংস করিয়া এতদিন গড়িয়া উঠিয়াছিল রাশি রাশি হিন্দু মন্দির (সম্পাদকীয়, আনন্দবাজার পত্রিকা, ২২ আগষ্ট ১৯৯৩ ও বৌদ্ধ দশরথ জাতক (৪৬১) রামায়ণের উৎস)।  বৌদ্ধদের বিশ্বমানবাধিকার এবং সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘন করে আজ হিংসা উন্মত্ত ভারত গর্ভনমেন্ট বুদ্ধের জন্মভূমি লুম্বিনী ধ্বংস করতে ও উদ্যত । “সমস্ত মানুষ স্বাধীনভাবে মর্যাদা এবং অধিকার নিয়ে জন্ম গ্রহন করে। তাঁদের বিবেক এবং বুদ্ধি আছে ; সুতরাং সকলেরই একে অপরের প্রতি ভ্রাতৃত্বসুলভ মনোভাব নিয়ে আচরণ করা উচিত (১ নম্বর সূত্র, হিউম্যান রাইটস)। ” সম্প্রতি লেখক মাহফুজ পারভেজের লেখা “রক্তাক্ত নৈসর্গিক নেপালে (৫৩)” শীর্ষক প্রবন্ধ টরন্টোর বেঙ্গলি টাইমসে (২৭ অক্টোবর ২০১১) পড়ে আমরা বিস্তারিত জেনেছি যে ভারত নেপালের সীমান্তের দানব নদীতে বাঁধ দিলে বুদ্ধের জন্মভূমি লুম্বিনী শহর সহ বিশাল জনপদ পানির অতল তলে তলিয়ে যাবে। উক্ত লেখককে আমাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
ভারতীয় ও নেপাল সীমান্তে দানব নদীতে বাঁধ দিয়ে সম্রাট অশোকের ঐতিহাসিক বুদ্ধ বন্দনার অশোক স্মৃতিস্তম্ভ সহ বুদ্ধের মাতা মহামায়া মেমোরিয়াল মন্দির, পুরাতত্ব সংগ্রহ শালা, কোটি কোটি ডলারে প্রতিষ্ঠিত বৌদ্ধ বিশ্বের বিভিন্ন বৌদ্ধ বিহার এবং লুম্বিনী শহর পানির অতল তলে তলিয়ে যেতে গভীর ষড়যন্ত্র রচনা করার সংবাদ দেশে বিদেশের বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।

বিশ্বকবির ভাষায়:

যাঁরা প্রতাপবান, বীর্য্যবান তাঁদের সংখ্যা পৃথিবীতে বেশী নয়। অনেক মানব, রাজা, ধনী মানী ও রাষ্ঠ্রনেতা এ পৃথিবীতে জন্মেছে। কিন্তু সম্পূর্ণ মনুষ্যত্ব নিয়ে কতজন এসেছেন? যিনি সম্পূর্ণ মনুষ্যত্ব নিয়ে এসেছিলেন আবার তাঁকে আহ্বান করছি আজকে এই ছিন্ন বিচ্ছিন্ন ভারতে, যেখানে মানুষের সঙ্গে মানুষের বিসম্বাদ, যেখানে ভেদ বিবাদে মানুষ জর্জরিত, সেই ভারতে তিনি আবার আসুন। সত্যের দ্বারা মানবের পূর্ণ প্রকাশ। যিনি আপনার মধ্যে সকল জীবকে দেখেন। তিনি স্বয়ং প্রকাশ। তিনি প্রকাশিত হবেন তাঁর মহিমার মধ্যে।”
মানবাধিকার না মেনে হিংসা উন্মত্ত ভারত একাই উপমহাদেশের নদীসমূহে বাঁধ দিয়ে রাজনীতির ছিনিমিনি খেলবে, ইহা ভারতীয় রাজনীতির অমানবিকতা। নদী মানব জাতির মা হয়ে মায়ের দুধের মতো নদীর জল পান করে মানব জাতি বেঁচে আছে।   গৌতমবুদ্ধ কি হিন্দুরাজনীতির শত্র“?  কনকমুনি বুদ্ধ, কাশ্যপবুদ্ধ এবং গৌতমবুদ্ধ দক্ষিন এশিয়ায় জস্মগ্রহন করেছিলেন। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের প্রথম পূর্বপুরুষ দূরদেশ থেকে ভারতে আসেন এবং আর্যদের ব্রাহ্মণ্যধর্ম ভারতীয় অহিংসাজাত ধর্ম নহে। বর্ণাশ্রম ধর্মে জাতিভেদে হিংসা, বুদ্ধের শিক্ষায় অহিংসা পরমধর্ম।   বৈদিক সভ্যতার পূর্বে সিন্ধু নদীর তীরে বসবাসরত  প্রাচীন ভারতের নাগরিকগণকে হিন্দু বলা হত। কলকাতার দেশ পত্রিকার মতে, বৌদ্ধধর্মকে ধ্বংস করতে জাতিভেদ প্রথাবাদী আজকের হিন্দুরাজনীতির উদ্দেশ্য এবং ব্যাভিচার দিয়ে মহাভারতের মহারণ্যের যাত্রা (পৃষ্ঠা ১৬, নৃসিংহ প্রসাদ ভাদুড়ি, দেশ, ১ নভেম্বর, ১৯৯৯, কোলকাতা ।
প্রথম বেদের বিপুল অংশ জুড়ে প্রধান দেবতা যুদ্ধ প্রিয় রাজা ইন্দ্রকে নিয়ে যিনি খৃষ্ঠপূর্ব ১৫,০০০ বছর পূর্বে মহেঞ্জোদারো ও হরপ্পার কাশ্যপবুদ্ধের বৌদ্ধধর্ম (মধ্যম নিকায়ের মাগন্দিয় সূত্র, ৭৫) ধ্বংস করে ভারতে বর্ণাশ্রমবাদী বৈদিক ব্রাহ্মণ্যধর্ম প্রতিষ্ঠা করেন। ঋগে¦দে (১/৩৬/৮), বিরাজমান যদু (যাদব ও  ভগবান শ্রীকৃেষ্ণর প্রথম পূর্ব পুরুষ ) দূরদেশ থেকে ভারতে আসেন। যদুরা পর্শুর সন্তান (১০/৮৬/২৩)। প্রাচীনতম বেদ হল ঋগে¦দ, যার পদ্যে রচিত সংহিতার দশটি মন্ডলে ১০২৮টি সূত্র আছে।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হিন্দুধর্ম ও বৈদিক রাজনীতির জাতিভেদের ভ্রষ্ঠাচারের বিরুদ্ধে ‘চন্ডালিকা’ শীর্ষক নৃত্যনাট্ট রচনা করেন এবং সিন্ধু সভ্যতার (মহেঞ্জোদারো হরপ্পা) কাশ্যপবুদ্ধ অনুগামী গৌতমবুদ্ধের প্রচারিত অহিংসা পরমধর্মের জয়গান গেয়েছেন। চোরে  না শোনে ধর্মের কাহিনী।
বৈদিক ধর্মকে রাজনীতির হাতিয়ার করে খৃষ্ঠ পূর্ব ৫,০০০ বছর পূর্বে বৈদিক রাজা ইন্দ্র কাশ্যপবুদ্ধের বৌদ্ধধর্ম (স্বপন বিশ্বাসের লেখা মহেঞ্জোদারো হরপ্পায় বৌদ্ধধর্ম) ধ্বংস করে ভারতে বৈদিক সভ্যতা স্থাপন করেন। উদাহরন স্বরুপ গৌতম বুদ্ধের ধ্যানভূমি বুদ্ধগয়া কে  হিন্দুরাজনীতি আজ দখল করে আছে । হিন্দুরাজনীতি গায়ের জোড়ে বুদ্ধের নাম জগন্নাথ ও তিরুপতি রেখে পুরীর জগন্নাথ (উড়িষ্যা) মন্দির এবং তিরুপতি মন্দির (অন্ধ্রপ্রদেশ) সহ হাজার হাজার বৌদ্ধ মন্দির সমূহ দখলে নিয়েছে (সম্পাদকীয়, আনন্দ বাজার পত্রিকা আগষ্ট ২২, ১৯৯৩)।

আমার কবিতায় মন বলে :


শঙ্করাচার্য আগুন দিয়ে বৌদ্ধশবের উপর নেচেছিল;
বুদ্ধগয়ায় হিন্দু আগ্রাসনে সুপ্রীম কোর্ট কি নিস্ফল ?
বৈদিক সন্ত্রাসী শাসকেরা ধ্বংস করে বৌদ্ধধর্ম প্রতিদিন
মহাকালের আদালতে তোমার বিচার শুধিতে হবে ঋণ।
ভারতীয় বৌদ্ধদের দুঃখে নৈরঞ্জনা গঙ্গা যমুনা কাঁদে
হিন্দু দলবৃত্তের দখলে বুদ্ধগয়ায় মিছে সমিতি বাঁধে।
ভারতের মালিকানায় কি হিন্দু ধর্মের সব অধিকার ?
সূচ্যগ্র মাটিতে ও  বুদ্ধগয়া বৌদ্ধদের হয়নি আর।
আমি একবিংশ শতাব্দীর প্রারম্ভ থেকে কথা বলি
বুদ্ধগয়ায় দাঁড়িয়ে বৌদ্ধদের অধিকার দাবী করি
বুদ্ধগয়ার বোধিবৃক্ষ ধ্বংস করল হিন্দু রাজা শশাঙ্ক
আগুন জ্বালিয়ে বৌদ্ধদের শবের উপর নেচেছিল।
ইতিহাসের অন্ধকারে বৌদ্ধহত্যাযজ্ঞের কথা বলি
বিষ্ণু ভগবান ছিল যারা কিছু দেখে ও দেখেনি।
বোধিসত্বই দিন রাত সপ্তাহ মাস  মহাকালের বছর
প্রতিদিনের সূর্যোদয়ে জন্ম ও সূর্যাস্তে মৃত্যুর স্বাক্ষর।

ভারতে বৌদ্ধ হত্যাযজ্ঞ :

ভারতীয় শাসক ও সমাজপতিগণ হিন্দু ধর্মকে তরোয়ালের মতো ব্যবহার করে  জাতিভেদ প্রথা ও সতীদাহ প্রথা সহ কত যে অমানবিক অন্যায় কাজ করেছে তা লিখে শেষ করা যায় না। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের যুগে ও হিন্দু সমাজে মানবাধিকার ছিল না, আজ ও নেই। ভারতীয় বৈদিকবাদী রাজনীতিকগণ খুব চতুর লোক হয়ে অন্যদেরকে বেকুব ভাবে ;  ব্রাহ্মণগণ শ্রেষ্ঠ হলে বৌদ্ধ সহ অন্য মানব সন্তান নিকৃষ্ঠ হয় কেন? রাজনীতি এবং সমাজনীতি মানবাধিকার মেনে জীবন যাপন করা সর্বশ্রেষ্ঠ নীতির রতœমালা। বৈদিক শাসকগণ দক্ষিন এশিয়া সহ ভারতের বৌদ্ধধর্মকে অজগরের মতো গিলেছেন।   বৌদ্ধ এবং জৈন জনতা  আজ ও হিন্দু শাসকদের গোলাম।
গঙ্গা শব্দের অর্থ গীতা র্(ঋষিরুবাচ, শ্লোক নং ৪৯, পৃ: ২২২) হলে হিংসা এবং স্বার্থের জন্যে বৈদিকবাদী হিন্দু শাসকগণ মা ভগবতী গঙ্গার গলায় ফারাক্কা বাঁধের ফাঁস তৈরী করার সময় ভারত সরকারের গৌতমবুদ্ধ, স্বামী বিবেকানন্দ (জীব সেবা) এবং মহাত্মা গান্ধীর অহিংস রাজনীতি কোথায় হারিয়ে গেল?  প্রসঙ্গত : আধুনিক যুগে বৈদিকবাদীরা হিন্দু ধর্ম নাম দিয়ে পৃথিবীর সকল ধর্মকে তাদের অধীনে আনতে গৌতমবুদ্ধকে বিষ্ণুর অবতার করেছেন, যিশুখৃষ্ঠকে ভগবান যিশু বলে তাঁর ছবি রামকৃষ্ণ মিশনে বিরাজমান এবং মধ্যযুগে সম্রাট আকবরের আমলে হিন্দু পন্ডিতগণ ইসলাম ধর্মকে হিন্দুর ভ্রাতৃধর্ম বানাতে আল্লাহ উপনিষদ রচনা করেন। হিন্দু রাজনীতিক গণ খুব চতুর লোক হয়ে কি অন্যদেরকে বেকুব ভাবে?
সম্রাট অশোকের বৌদ্ধ ভারত গোলেমালে হিন্দু ইন্ডিয়া হল কেন ? মহাভারতে হিংসার বিভীষিকা বন্ধ হয়ে গেল একমাত্র গৌতমবুদ্ধের অহিংসা পরমধর্মে। সম্রাট অশোক বর্ণাশ্রমবাদী (গীতা ৪/১৩ এবং ১৮/ ৪৪ জাতিভেদ প্রথা)  বৈদিক ব্রাহ্মণ্যধর্ম এবং জৈনধর্ম ত্যাগ করে করুনাঘন বুদ্ধের ধর্ম গ্রহন করেছিলেন।  বৈদিক পন্থী মহাভারতের অমর অবদান ছিল দুর্যোধন দাবাখেলায় জয়ী হয়ে রাজসভায় বৌদি (বা পঞ্চপান্ডব ভাইদের পতœী) দ্রৌপদীর বস্ত্র হরণের ষড়যন্ত্র। বিভেদ বিদ্বেষের নামই কি জাতিভেদ প্রথা বা রাজনীতি? প্রকৃতিকে নিয়ে ভারত রাজনীতির দাবাখেলা (সতরঞ্জি) শুরু করেছে। কলঙ্কিত মহাভারতের লেখক ঋষি বেদব্যাস তাঁর মায়ের (সত্যবতী) কুমারীকালের কলঙ্ক হলেও ধৃতরাষ্ঠ্র, পান্ডু এবং বিধূরের জন্মদাতা ছিলেন। জনতার প্রশ্ন : ঋষি বেদব্যাস ধৃতরাষ্ঠ্রের মা, পান্ডুর মা এবং বিধূরের মা কে সামাজিক নিয়মে বিয়ে না করে ও তাদের (ধৃতরাষ্ঠ্র, পান্ডু এবং বিদুরের) পিতা হলেন কি অধিকারে?
দ্বাদশ শতাব্দীর আগে প্রাচীন বাংলা বা বাংলাদেশের জনসাধারণ প্রায় সবাই বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী ছিলেন (কথাশিল্পী শওকত আলীর লেখা প্রদোষে প্রাকৃতজন এবং দুষ্কালের দিবানিশি)। হিন্দু রাজনীতির গভীর যড়যন্ত্রে বাঙালিজাতি ইসলাম ধর্ম গ্রহন করেন । মানবাধিকারে প্রতিবেশী আর এক প্রতিবেশীর আত্মীয় স্বজন।  হিন্দুধর্মে জাতিভেদ প্রথায় অখন্ড মানব জাতিকে খন্ড বিখন্ড করে (১) ব্রাহ্মণ (২) ক্ষত্রিয় (৩) বৈশ্য এবং (৪) শূদ্র , দলিত বা অনগ্রসর জাতি (সিডিউল কাষ্ট) সৃষ্ঠি হল।

গৌতমবুদ্ধের শিক্ষা : অহিংসা পরম ধর্ম

নদী কি ভারত সরকারের গৃহপালিত শক্তির উৎস? আজকের ভারত সরকার নদীকে রাজনীতির অস্ত্রের মতো ব্যবহার করে জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার সনদ লঙ্ঘন করেছেন। প্রসঙ্গত: আজ ভারতের প্রতিবেশী বাংলাদেশকে পানি না দিতে ভারতীয় রাজনীতি বিভিন্ন নদীতে বাঁধ দিচ্ছে এবং গঙ্গা নদীর ফারাক্কায় বিষক্রিয়ার (ডঃ মোহাম্মদ আদেল মিঞা, ছড়িয়ে পড়েছে তৃতীয় জীবজগৎ ও ফারাক্কায় বিষক্রিয়া, সাপ্তাহিক বিচিত্রা, ৩০ মে ১৯৯৭) সুনামি শুরু হয়ে পানিতে (মাটির তলায়) আর্সেনিক বিষ বাংলাদেশে এবং ভারতে । বৈদিকপন্থী হিন্দু শাসকগণ আজকের হিন্দুরাজনীতি দিয়ে গঙ্গার ফারাক্কা  ও তিস্তার প্রকল্প ব্যারেজ সহ নদীসমূহকে সাত পাঁকে বেঁধে নদীর জলকে ব্যভিচার করার ফল; জলে বিষ আর্সেনিক, যেমন হিন্দু ধর্মে হিংসার ফল জাতিভেদ প্রথা। পানির অপর নাম জীবন।
১৯৬০ সালে জাতিসংঘের সাবেক মহাসচীব ডঃ উথান্ট সিকিউরিটি কাউন্সিলের অনুমতিক্রমে পরম পূজনীয় গৌতমবুদ্ধের পবিত্র জন্মভূমিকে “জাতিসংঘের লুম্বিনী প্ল্যান” হিসেবে অফিসিয়াল স্বীকৃতি প্রদান করেন এবং বিশ্বের যে ক’টি জায়গাকে ঐতিহ্যপূর্ন স্থান বা ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট ঘোষনা করা হয়েছে, ‘লুম্বিনী উদ্যান’ তাদের অন্যতম। কয়েক বছর আগে বিভিন্ন ইংরেজী মিডিয়া ভারত নেপালের সীমান্ত নদীতে বাঁধ দিলে লুম্বিনী শহর জলে ডুবে যাবার সম্ভাবনায় বৌদ্ধ জগত বিস্ময়ে হতবাক। যেখানে আলোর ঝর্ণাধারা সেখানে হিন্দু রাজনীতির মহা ভারতীয় আঁধারের এতো ষড়যন্ত্র কেন? পানির অপর নাম জীবন। ভারতীয় নদী বাঁধন রাজনীতি জীবজগৎ সহ মানবজাতি ধ্বংসের রাজনীতিতে বৈদিক  স্বার্ধান্ধ জাতিভেদ প্রথার রাজনীতিই দায়ী। গৌতম বুদ্ধের অহিংসা পরম  ধর্মে পানি বিশ্বমৈত্রীর প্রতীক।  বৈদিক জাতিভেদের ভারতে কি মানবতা ধর্ম নয় কেন?  আজকের নরমেধ যজ্ঞে ফারাক্কা ব্যারেজ ও তিস্তা ব্যারাজ কি ভারতীয় হিন্দু রাজনীতির অস্ত্র? নদীর জল শত্র“ মিত্র সবাই একসাথে পান করে বেঁচে থাকেন।
বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গকে ধ্বংস করার জন্যে ভারত তদকালীন পূর্ব পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পবিত্র গঙ্গা নদীর উপরে ফারাক্কা বাঁধ প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। বিধি বাম। পশ্চিমবঙ্গ নদী কমিশন রিপোর্টে প্রকাশিত সংবাদ (আমন্ত্রন টি ভি, টরন্টো, ১লা বৈশাখ, ১৪১৮ বঙ্গাব্দ)  অনুসারে, কলকাতা বন্দরে গ্রীষ্মকালে পর্যাপ্ত পরিমানে পানির রাখার জন্যে ফারাক্কা বাঁধ তৈরী করার পর থেকে গঙ্গার ভাঙনে পশ্চিমবঙ্গে হাজার হাজার অপাপবিদ্ধ জনতা গৃহহীন এবং অসহ দারিদ্র নিয়ে জীবন যাপনে দুঃখের দহনে করুন রোদনে তিলে তিলে ক্ষয় হচ্ছে। গঙ্গার জল মাথায় দিয়ে গঙ্গা পূজার পর ভারতীয় হিন্দুরাজনীতি গঙ্গাকে সাতপাঁকে বেঁধে রেখেেেছ। জলকে নিয়ে রাজনীতি করলে জল ভবিষ্যতে হারিয়ে যাবে। হিংসার কারনে আজ অনন্ত সমস্যা সমাগত। হিন্দুধর্মের জাতিভেদে সভ্য মানুষের মানবাধিকার নেই এবং বিশ্ববৌদ্ধ জগতের পবিত্রতম তীর্থভূমি বুদ্ধ গয়া দখলের পর বাবরি মসজিদকে ধ্বংস করা হয়েছে। ভারত সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে শিল্পী নচিকেতা চক্রবর্তীর সঙ্গীত (শূন্য শূন্য শূন্য) সহ ভারতীয় রাজনীতি এবং সরকারের ভ্রষ্ঠাচারের বিরুদ্ধে নানা সংবাদ পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হচ্ছে দিনের পর দিন। হিন্দুরাজনীতি বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে।  সপ্তপুরুষ পরিশুদ্ধ নিয়ে গৌতমবুদ্ধের জন্ম এবং তিনি অহিংসা পরম ধর্ম প্রচার করেন।  ভারত সরকার যখন দানব (ও দান্দা নদী, নেপালের দক্ষিন পশ্চিম সীমান্তে) নদীতে বাঁধ দিয়ে দানব হয়ে বুদ্ধের জন্মভূমি ধ্বংস করতে উদ্যত তখন চীন সরকার তা (লুম্বিনী) রক্ষা করতে বদ্ধপরিকর (বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম জুলাই ৩১, ২০০১)। ভারতের মানস সরোবর আজ চীনে কেন?
প্রসঙ্গত: হিন্দু রাজা শশাঙ্ক ৭ম শতাব্দীতে বুদ্ধগয়ায় মহাবোধি মন্দির দখল করে বোধিবৃক্ষ ধ্বংস সহ শত শত বৌদ্ধহত্যা যজ্ঞ করার ইতিহাস চীনা পরিব্রাজক বৌদ্ধভিক্ষু ইউয়েন সাং তাঁর ভ্রমন কাহিনীর ইতিহাসে লিপিবদ্ধ করেছেন। ইহা ও উল্লেখযোগ্য যে, চীন সরকার ২০০৬ সালে বাঙালির গৌরব সন্তান অতীশ দীপংকরের জন্মভূমি বজ্রযোগিনী গ্রামে (মুন্সিগঞ্জ) স্মৃতি মন্দির স্থাপন করেছেন। কয়েক বছর পূর্বে ভারতের বিহার রাজ্যের নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গনে চীন সরকার কয়েক কোটি ডলার খরচ করে বৌদ্ধ ভিক্ষু ইউয়েন সাং মেমোরিয়াল বৌদ্ধ বিহার স্থাপন করে সরকারি ভাবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে “আন্তর্জাতিক নালন্দা বৌদ্ধ বিশ্ববিদ্যালয় মহাপরিকল্পনা” ঘোষনা করা হলো। নোবেল বিজয়ী অমর্ত্য সেন ঢাকার বাংলা একাডেমির একুশের বইমেলার (২১ ফেব্র“য়ারী ২০১১) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সন্মানিত অতিথি হিসেবে তাঁর ভাষনে চর্যাপদের (৪৯ নম্বর কবিতার মিথ্যা ব্যাখ্যা করেন) বাঙালি কবি ভুসুকুপাদকে অপমানিত করেন এবং বুদ্ধাব্দকে বাদ দিয়ে ইসলামিক হিজরি (১৪৩৩) সালকে  হিন্দুত্বকরনে বঙ্গাব্দের (১৪১৯) মিথ্যা ইতিহাস বর্ণনা করেন। হিন্দুরাজনীতি বঙ্গাব্দের বাংলা পঞ্জিকা রচনায় হিজরি সালকে ভাড়া করে এনে সূর্য্য ক্যালেন্ডারের দোহাই দিয়ে বাঙালি মুসলমানদের চোখে ধোকা দেয় এবং ইসলামিক হিজরি সালকে বিকৃত করে বঙ্গাব্দ রচনা করার মিথ্যা ইতিহাস বর্ণনা করেছে। চান্দ্র ক্যালেন্ডারকে অনুসরণ করে দিওয়ালী, দূর্গা পূজা সহ সকল হিন্দু উৎসব সম্পন্ন হলে হঠাৎ করে ইসলামিক হিজরি সালের জন্য চান্দ্রমাস বাদ দিয়ে সূর্য ক্যালেন্ডারের নাম দিয়ে হিজরি সালকে হিন্দুত্বকরণ করে বঙ্গাব্দ করা হ’ল কেন? হিন্দুরাজনীতি সম্রাট অশোক ও পাল রাজত্বের বুদ্ধাব্দকে কবর দিয়ে ঢাকায় অমর্ত্য সেনের উক্ত ভাষনই রাজনৈতিক দলিল।
হিন্দুরাজনীতি কিন্তু গৌতমবুদ্ধকে তাঁদের নবম অবতার বানিয়ে মিথ্যা ইতিহাস রচনা করে  বৌদ্ধ ত্রিপিটককে (বুদ্ধবংশ) অস্বীকার করতে রামায়ণের অযোধ্যা কান্ডে (অধ্যায়ে) ৩২ বত্রিশ নম্বর শ্লোকে বৈদিক পন্থী হিন্দু পন্ডিতগণ বুদ্ধ এবং বৌদ্ধদেরকে যে ভাবে গালাগাল করেছেন তার প্রমান ভারত সরকারের বুদ্ধের জন্মস্থান ‘লুম্বিনী উদ্যান’ ধ্বংস করার হীন ষড়যন্ত্র।   রাখে বিশ্বমৈত্রী, মারে কে?
কোন হিন্দু মন্দিরে বুদ্ধ পূজা হয় না, এবং ব্রাহ্মণ শাসিত পশ্চিমবঙ্গে ‘বুদ্ধ পূর্ণিমার সরকারি ছুটি’ নেই; তবু ও গৌতমবুদ্ধকে নিয়ে হিন্দু পন্ডিতগণ ‘নবম অবতার’ নামে মিথ্যা ইতিহাস রচনা করে বুদ্ধগয়ায় ‘মহাবোধি মন্দিরের দান বাক্স’ থেকে টাকা আনা পাই চুরি করে, ‘হিন্দু মার্কা ম্যানেজম্যান্ট কমিটি’ প্রতিষ্ঠিত হল কেন?   হিন্দু শাসকগণই বৌদ্ধধর্মকে ধ্বংস করেন। হিন্দুরাজনীতি গৌতমবুদ্ধকে নিয়ে মিছামিছি হিন্দুর ভগবান বানিয়েছেন এবং সব প্রমান ইতিহাসে বিরাজমান।

জনতার প্রশ্ন : চর্যাপদের আগে বাংলা ভাষায় বিপুল বৌদ্ধ ত্রিপিটক কোথায় হারিয়ে গেল?

সিন্ধুসভ্যতায় (মহেঞ্জোদারো এবং হরপ্পা) বৌদ্ধধর্ম, দক্ষিন এশিয়ার সম্রাট অশোকের শিলালিপি, চর্যাপদ, সিদ্ধাচার্য এবং বাংলাভাষা, বাঙালি জাতীয় ঐতিহ্যের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। মানুষ মানুষের ভাই বোন এবং আত্মীয় স্বজন। জয় মানবতার জয়।হিন্দু ধর্মের মিথ্যা ইতিহাস এবং জাতিভেদ প্রথাই কি সকল ধর্মের উৎস ? বৈদিকবাদী সন্ত্রাসী শাসকগণ উড়িষ্যায় পুরীর জগন্নাথ মন্দির দখল করে গৌতমবুদ্ধের নাম হয় জগন্নাথ এবং অন্ধ্রপ্রদেশের  তিরুমালা বৌদ্ধ মন্দির নাম বদলিয়ে হল ভেংকটেশ্বর। পাকিস্তানে মহেঞ্জোদারোয় বৌদ্ধদের রাজর্ষি বোধিসত্ব বিরাজমান সত্বে ও হিন্দুরাজনীতি বৌদ্ধদের দাবী অস্বীকার করেন। আধুনিক যুগে বৈদিকবাদীরা হিন্দু ধর্ম নাম দিয়ে পৃথিবীর সকল ধর্মকে তাদের অধীনে আনতে গৌতমবুদ্ধকে বিষ্ণুর অবতার করেছেন, যিশুখৃষ্ঠকে ভগবান যিশু বলে তাঁর ছবি রামকৃষ্ণ মিশনে বিরাজমান এবং মধ্যযুগে সম্রাট আকবরের আমলে হিন্দু পন্ডিতগণ ইসলাম ধর্মকে হিন্দুর ভ্রাতৃধর্ম বানাতে আল্লাহ উপনিষদ রচনা করার পর  সুযোগ বুঝে বিগত ৬ই ডিসেম্বর ১৯৯২ সালে আল্লাহের বাবরি মসজিদ ধ্বংস করা হল। হিন্দুরাজনীতিক বন্ধু হয়ে পরম শত্র“র কাজ করে।